
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার সর্বত্রই আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। আলুর ভালো দাম পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। বিগত ২ বছর আগেও অনেকটা ক্রেতাশূন্য ছিল এখানকার আলুর পাইকারি বাজার। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ক্রেতারা ভিড় করছেন ক্ষেত থেকে আলু কেনার জন্য। এ ছাড়া কৃষকেরা ক্ষেত থেকে আলু তোলার পর বিভিন্ন পাইকারি আড়তে বিক্রি করছেন বেশ ভালো দামেই। হাটবাজারগুলোতে আলু বিক্রি করে বাড়তি দাম পেয়ে কৃষকদের মাঝে উৎসাহ দেখা দিয়েছে।
উপজেলা সিদলা, জিনারী আড়াইবাড়িয়া,শাহেদল ইউনিয়নের কৃষকদের আলু চাষের প্রতি আগ্রহ বেড়ে গেছে। গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। আলু চাষের সাথে জড়িত কয়েক হাজার কৃষক রয়েছেন ফুরফুরে মেজাজে। গ্রামীণ হাটেও প্রচুর আলু কেনাবেচা হচ্ছে। এসব হাটবাজার থেকে আলু গাজিপুর, ঢাকার কাওরান বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়।
সরেজমিনে উপজেলার সিদলা, জিনারী আড়াইবাড়িয়া, শাহেদল ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, পরিবেশ অনুকূলে থাকায় এ বছর আলু আবাদ ভালো হয়েছে। কিন্তু বিগত ২ বছর
আগেও বাম্পার ফলন সত্বেও ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় কৃষকদের বিঘা প্রতি লোকসান গুনতে হয়েছিলো ৫-৭ হাজার টাকা। ফলে অনেক কৃষক লোকসানের ভয়ে ক্ষেত থেকে আলু তুলেননি। কেউ কেউ বাকিতে ফড়িয়াদের নিকট আলু বিক্রি করেও যথা সময়ে টাকা না পেয়ে চরম বিপাকে পড়েছিলো। তাই সাধারণ কৃষক আলুর আবাদ কমিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু দুই বছর যাবৎ ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকদের আলু চাষের আগ্রহ কিছুটা বেড়ে যায়। সিদলা, জিনারী আড়াইবাড়িয়া, শাহেদল ইউনিয়নের মাটি আলু চাষের জন্য খুবই উপযোগী।
উপজেলার সাহেবের চর গ্রামের আদর্শ কৃষক বাদল মিয়া, চর-হাজিপুর গ্রামের কৃষক মজনু মিয়া, জলিল মিয়া, কাওনা গ্রামের আশরাফুল ইসলাম, আব্দুল কাইযুম, দিদারুল ইসলামসহ অনেকেই জানান, এ বছর জমিতে ভালো মানের বীজ আলু রোপণ করেছেন। এক বিঘা জমিতে আলু চাষ করতে বীজ ক্রয়,জমি প্রস্তুত,সার-কীটনাশক ও শ্রমিক মুজুরীসহ মোট উৎপাদন খরচ হয়েছে ২০-২৫ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি ফলন হয়েছে প্রায় ৭৫ মণ। বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি ২৫-৩০ হাজার টাকা লাভ পেয়ে তার এখন মহাখুশি।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ইমরুল কায়েছ জানান, এ বছর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে আলু চাষের লক্ষমাত্রা ৩৭০ হেক্টর নির্ধারণ থাকলেও আবাদ হয়েছে অনেক বেশি। এ বছর আলুর দাম ভালো পাওয়ায় চাষিরা মহাখুশি। তবে আলুর সংরক্ষণ সংকট কাঠাতে তিনি এ উপজেলায় একটি হিমাগার স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
তারেক/বার্তাবাজার/এম আই