
চলনবিলের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সংগ্রহশালা ‘প্রীতম- প্রিয়ন্তী’ ক্ষুদ্র জাদুঘরটি পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। শখের বসে ব্যক্তি
উদ্যোগে গড়ে ওঠা এই সংগ্রহশালাটি ইতিমধ্যে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
প্রতিদিন উৎসুক দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে। নাটোরের গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাঁচকৈড় পুরানপাড়া মহল্লায় গুরুদাসপুরের সাবেক উপজেলা
চেয়ারম্যান আলহাজ আয়নাল হক তালুকদারের মেজো ছেলে আবুল কালাম আজাদ ব্যক্তি উদ্যোগে এবং এলাকাবাসির সহায়তায় ১৯৯৪ সাল থেকে সংগ্রহশালাটি গড়ে তোলেন।
সংগ্রহ বাড়ার সাথে সাথে বেড়েছে সংগ্রহশালার আয়তনও। ৮ ফুট দৈঘ্য ও ৯ ফুট প্রস্থের ৩টি কক্ষে বর্তমানে সংগ্রহশালার কার্যক্রম চলছে। এর
আয়তন বাড়বে বলে জানান আজাদ তালুকদান। সংগৃহিত নির্দশনাবলির মধ্যে রয়েছে ছয়টি পিতলের পাত্র। সেখানে রক্ষিত ধনদৌলত। মাঝখানে দুটি বিষধর সাপ পাহারা দিচ্ছে। কল্পকাহিনী সর্বত্র ধনভান্ডার নয়। দেশ-বিদেশের মুদ্রা (কয়েন) দিয়ে সাজানো ধনভান্ডারে বসানো হয়েছে প্লাষ্টিকের সাপ। নামকরণ করা হয়েছে রন্ত ভান্ডার। রন্ত ভান্ডারের আশেপাশে রয়েছে দেড়শ বছরের পুরনো হাতির দাঁত। সোয়া কেজি ওজনের সামদ্রিক ঝিনুক। আধাকেজি ওজনের কড়িসহ নানা প্রাচীন নিদর্শন।
এছাড়াও ১৬৭ টি দেশের নোট-কয়েন, ছোট্র কুরআন শরীফ, বিভিন্ন সময়ের স্বর্ণ-রৌপ্য, তামা ও ধাতব মুদ্রা এবং বিভিন্ন ধরনের প্রস্তর ও পোড়ামাটি ভাস্কর্য রয়েছে এখানে। সোনার চামচ, রুপার গ্যাস, চাঁদির প্লেট, মুকুট, পিতলের প্রাচীন বাটি, সিঁধুরদানীসহ রয়েছে নানা প্রকার প্রাচীন ঐতিহ্য। নাটোরের দিঘাপতিয়া রাজবাড়ির ঐতিহ্যবাহী জিনিসপত্রের মধ্যে মাটির তৈজসপত্র, পিতলের কলস, মুর্তি, শামক, পাটের জুতা, পুরনো কাঠের খড়ক, কলের গান অধুনালুপ্ত ঢেকি, লাঙ্গলের ইস, মাথাল, কুড়াল, খাড়–পঞ্চমীও রয়েছে।
এছাড়াও দেশি ফল, গাছের পাতা ও বিভিন্ন জাতের মাছ দিয়ে প্রায় ৫০ আইটেম লেখা আজাদের প্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদি এবং সেনাহাহিনীর যুদ্ধবস্থায় ম্যুরালও রয়েছে। বিশ বছর ধরে দেশ-বিদেশ থেকে নানা নির্দশন সংগ্রহ করে চলেছেন আজাদ। পেশায় সে একজন ব্যবসায়ী। সময়াভাবে ইচ্ছেমতো সংগ্রহশালাটি মাঝপথে থেমে গিয়েছিল। তার উৎসুক ছেলে-মেয়ে প্রীতম-প্রিয়ন্তীর আবদারে আবার কার্যক্রম শুরু করেন সংগ্রহশালিাটির। শুক্রবার সকাল ৯ টায় থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য সংগ্রহশালাটি উম্মুক্ত রাখা হয়। সব মিলিলে বহু পুরাতন যুগের ব্যবহৃত প্রায় ৩৫০ রকমের জিনিসপত্র এখানে রয়েছে।
মেহেদী/বার্তাবাজার/এম.এম